বিনোদন ডেস্খ:
কলকাতার বরেণ্য অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। শুরু হয় মৃদু শ্বাসকষ্ট। তাকে ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিটে (আইটিইউ) স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার সকালেও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল। তবে বিকেল থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অনিয়মিত রক্তচাপ এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় আইটিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ৮৫ বছর বয়সী এই অভিনেতাকে।
এর আগে গত মঙ্গলবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরে ক্যানসার, সিওপিডি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে। তার ওপরে করোনা পজিটিভ। ফলে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
বেলভিউ হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্রদীপ ট্যান্ডন বলেন, ‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসা চলছে। তিনি এখন আছেন হাসপাতালের আইটিইউয়ের একটি কেবিনে। এখানে চারদিন থাকতে হতে পারে।’
গত কয়েক মাস শুটিং বন্ধ ছিল টলিউডে। নিয়মবিধি মেনে সম্প্রতি সৌমিত্র শুটিং শুরু করেছিলেন। কাজ করছিলেন তার ওপর তৈরি একটি তথ্যচিত্রে। এর মধ্যেই তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি কলকাতার মির্জাপুরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রিট সিটি কলেজে সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’র মধ্য দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এরপর তিনি সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার ভিতর ১৪টিতে অভিনয় করেছেন। পরবর্তীতে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো জনপ্রিয় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘দেবী’, ‘স্বরলিপি’, ‘সমাপ্তি তিনকন্যা’, ‘আগুন’, ‘বেনারসি’, ‘অভিযান’, ‘শেষ প্রহর’, ‘চারুলতা’, ‘বাক্স বদল’, ‘কাপুরুষ’, ‘কাচ কাটা হীরে’, ‘বেলাশেষে’, ‘প্রাক্তন’ উল্লেখযোগ্য।
বাংলা চলচ্চিত্রের এই দিকপাল ২০১২ সালে পেয়েছেন ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার। এ ছাড়া পেয়েছেন দেশ বিদেশের বহু পুরস্কার।